শিবের পাঁচটি প্ৰিয় বস্তু

112

দেবাদি দেব মহাদেবকে তুষ্ট করতে ও তাঁর কৃপা পেতে শ্রাবন মাসে ব্রত রাখেন অনেকেই।এই সময়ে যত শিব বিষয়ে পাঠ করা যায় এবং শিব তত্ত্ব শোনা যায় ততো ভালো|আজ আপনাদের শিবের পাঁচটি বিশেষ অলংকারের কথা জানাবো যা সর্বদা শিবের সঙ্গে থাকে এবং এগুলি অর্পণ করে শিবকে সহজেতুষ্ট করা যায়।প্রথমেই বলবো ত্রিশূলের কথা।মহাদেবের ত্রিশূল তিনটি শক্তির প্রতীক। জ্ঞান, ইচ্ছা ও সম্মতি প্রদান করেন মহাদেব। আবার কথিত আছে, শিবের ত্রিশূল প্রতিটি মানুষকে তার কর্ম হিসেবে শাস্তি দেয়। ঘরে সুখ শান্তি বৃদ্ধি করত ত্রিশূল রাখুন। অনেকে শিবের মূর্তির পাশে ত্রিশূল রেখে থাকেন। বহু মন্দিরে প্রতিদিন শিবের ত্রিশূলের পুজো করা হয়।বাস্তু মতে গৃহে ত্রিশূল থাকলে এটি সমস্ত ক্ষতি ও দুঃখের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে। শিব শিব কে ত্রিশুল নিবেদন করতে পারেন এতে সহজেই মহাদেবের আশীর্বাদ পাবেন।দ্বিতীয় স্থানে রাখবো রুদ্রাক্ষ। শাস্ত্রে রুদ্রাক্ষের গুরুত্ব রয়েছে বিস্তর। মহাদেবের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই গাছের। কথিত আছে, ভগবান শিব কঠিন তপস্যার পর চোখ খুলতে তাঁর চোখ থেকে অশ্রু নির্গত হয়। যা মাটিতে পড়তে সেই অশ্রু থেকে তৈরি হয় রুদ্রাক্ষ গাছ।রুদ্রাক্ষ ও মহাদেব প্রায় সমার্থক। মহাদেবের খুব প্ৰিয় অলংকার রুদ্রাক্ষ যারা মধ্যে রয়েছে অফুরন্ত শক্তির ভান্ডার|জ্যোতিষ শাস্ত্রে গ্রহ অনুসারে রুদ্রাক্ষ ধারন করে প্রতিকারের কথা বলা হয়|শ্রাবন মাসে শিব লিঙ্গেযদি রুদ্রাক্ষ অর্পণ করাযায়। শিব কৃপা লাভ হয়।তৃতীয় হলো ডমরু শিবের অন্যতম প্ৰিয় বস্তু এটি ।শিবের হাতে ডমরু নামে এই বাদ্যযন্ত্র সর্বদা দেখা যায়। শিব নটরাজ নামেও খ্যাত। কথিত আছে ডমরু বাজিয়ে তিনি নৃত্য করেন। শিব এই কারণে নটরাজ নামেও খ্যাত।শিবের ত্রিশূলে সব সময় বাঁধা থাকে ডমরু। আবার তন্ত্র শাস্ত্রে বলা হয় শিবের ডমরু থেকে তন্ত্রের জন্ম হয়েছে।ডমরু আবার বেদ ও তার উপদেশের প্রতীক। মনে করা হয়, ডমরু বাজিয়ে শিব পুজো করলে মঙ্গল হয়। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, শিব ডমরুর শব্দ শুনলে খুশি হন। তাই তাঁকে আনন্দ দিতেপুজোর সময় ডমরু বাজাতে পারেন অথবা শিবশ্রাবন মাসে শিবকে ডমরু নিবেদন করে নিজের মনোস্কামনা জানান।আপনার মনোস্কামনা দ্রুত পূর্ণ হবে।শিব তার গায়ে ভশ্ম মাখতে ভালো বাসেন।পুরান মতে এই ভস্ম এনে দিতো শিবের এক ভক্ত যার নাম ভশমাসুর। একদিন সে যখন জানালো যেসে আর ভশ্ম খুঁজে পাচ্ছে না এবং যদি মহাদেব তাকে বর দেন যে তার স্পর্শে যেকোনো জীব এবং বস্তু ভস্মতে পরিণত হবে তাহলে তার কাজের সুবিধা হবে। ভোলানাথ তথাস্তু বলে দিলেন।পরবর্তীতে ভক্ত তার আরাধ্যকেই ভশ্মিভুত করতে চাইলে শ্রী বিষ্ণু অবতীর্ণ হয়ে কৌশল খাটিয়ে ভশমাসুরকে বধ করেন।শ্রাবন মাসে শিবকে ভশ্ম নিবেদন করলে শিব সন্তুষ্ট হন এবং মনোস্কামনা পূর্ণ করেন।যদিও বাস্তবে বাঘছাল অর্পণ আমাদের দেশের আইন অনুসারে সম্ভব নয়। তবুও শিবের এটি অন্যতম প্ৰিয় বস্তু। পৌরুষ এবং অফুরন্ততেজের প্রতীক এই বাঘ ছাল মহাদেবের অঙ্গে স্থান পায়।সমগ্র শ্রাবন মাস জুড়ে থাকছে শিব নিয়ে নানা তথ্য। পৌরাণিক ঘটনা এবং শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধ।ফিরে আসবো আগামী পর্বে।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।