কালীকা পুরান – শরভ অবতারের দেহত্যাগ

393

কালীকা পুরানে শিবের বিবাহর যেমন উল্লেখ আছে তেমনই দেবাদিদেব কে নিয়ে আরো অনেক ঘটনা লিপিবদ্ধ আছে আজ বলবো শরভ অবতার নিয়ে|নৃসিংহ দেবের হাতে হিরণ্য কশিপুর বধ হলো কিন্তু নৃসিংহদেবের ক্রোধ কম হল না। তিনি ভয়ানক ধ্বংসলীলা চালিয়ে যেতে থাকেন। এই সময়ে সব দেবতারা একসাথে শিবের শরণ নেন। তাঁরা বুঝতে পারেন, একমাত্র মহাদেবই পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারেন। শিব বীরভদ্র ও ভদ্রকালীকে প্রেরণ করেন নৃসিংহকে থামানোর জন্য। কিন্তু মহাপ্রতাপ নৃসিংহ সেই দুই মহাশক্তিকেও বিপর্যস্ত করে ফেলেন।শেষে মহাদেব নিজেই শরভ নামের এক বিচিত্রদর্শন প্রাণীর রূপ নিয়ে আবির্ভূত হন।এই শরভের রূপের বর্ণনা আছে পুরানে|শরভ এক সুবিশাল পাখি। তাঁর সহস্রবাহু এবং পশুর মতো দেহ|নৃসিংহ ও শরভ অবতারের মধ্যে ভয়ানক যুদ্ধ হয়|শরভের আঘাতে নৃসিংহ আত্মসংবরণ করেন। শরভই শেষ করেন নৃসিংহের লীলা।নৃসিংহ দেবের ক্রোধ থেকে রক্ষা পায় সৃষ্টি|শিব নিজে একজন পরম বৈষ্ণব এবং নৃসিংহ দেব স্বয়ং বিষ্ণু| ভক্তের দ্বারা ভগবানের বধ বা ভক্ত এবং ভগবানের যুদ্ধ সনাতন ধর্ম শাস্ত্রের অতি বিরল ঘটনা|কালীকা পুরান অনুসারে বিষ্ণু অবতার নৃসিংহদেব স্বয়ং তার এই পরিণতি বেছে নিয়েছিলেন কারন তার ইচ্ছা ছাড়া জগৎ সংসারে কিছুই সম্ভব নয় শরভের কাছে পরাজয়ের পরে, বিষ্ণু তাঁর স্বাভাবিক রূপ গ্রহণ করেছিলেন এবং শিবের যথাযথ প্রশংসা করেছিলেন ও নিজেকে শিব ভক্ত রূপে ঘোষণা করেছিলেন ।নিজের কাজ শেষ করার পর শরভ ও দেহত্যাগ করেন স্বেচ্ছায়|শিবের এই রূপ “শরবেশমূর্তি” বা “সিংহমনামূর্তি” নামেও পরিচিত আবার শরভেশ্বর নামে তার পূজাও হয়|আগামী পর্বে অন্য কোনো পৌরাণিক কাহিনী আপনাদের শোনাবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|