সাধক কথা – শ্রী শ্রী ভবা পাগলা

361

সামনেই গুরু পূর্ণিমা, আমাদের দেশে অদ্ভুত প্রতিভা সম্পন্ন বহু গুরু ও সাধক সাধিকা জন্মেছেন যাদের সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তী ও লোককথা প্রচলিত আছে, ধারাবাহিক ভাবে এমন কিছু গুরু ও সাধক সাধিকা দের নিয়ে বলবো আগামী কিছুদিন গুরুর কথা|আজ শুরু করবো শ্রী শ্রী ভবা পাগলা কে দিয়ে|ভারতের সাধকদের মধ্যে যারা সঙ্গীত ও আধ্যাত্মিকতা এক সূত্রে গেথে ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ভবেন্দ্র মোহন সেন ওরফে ভবাপাগলা, তিনি ছিলেন পাগল সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং বহু মানুষ তার আদর্শে দীক্ষিত হয়ে তার চরনে নিজেদের জীবন সমর্পন করেছেন|ভবা পাগলার জন্ম আনুমানিক ১৮৯৭ খৃস্টাব্দে বাংলাদেশে, তার পিতার নাম গজেন্দ্র কুমার সাহা, পারিবারিক সূত্রেই ভবা ছিলেন কালী সাধক|পরবর্তীতে দেশ ভাগ হলে ভবাকে চলে আসতে হয় ভারতে, সেখানেও তার সঙ্গে ছিলো একটি কালী মূর্তি,থাকতে শুরু করেন শোভাবাজার অঞ্চলে এক ভক্তের গৃহে, সেখান থেকেই ক্রমশঃ ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার গান ও অলৌকিক কীর্তি|শৈশব থেকেই ভবা ছিলেন ভাবুক প্রকৃতির ও সর্বদা কালী সাধনায় মগ্ন,প্রথা গত শিক্ষা খুব বেশি না থাকলেও আধ্যাত্মিক ভাবে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন ভবা পাগলা|ভবা পাগলার সহজাত প্রতিভা ছিলো গান লেখার ও সুর করার, প্রায় ছেয়াশি হাজার সংগীত রচনা করেছিলেন ও তাতে সুর দিয়েছিলেন,ভবা পাগলা, শ্যামা সংগীত বা ভক্তি গীতিই ছিলো তার সংগীতের প্রধান ভিত্তি|কালী সাধনার মাধ্যম হিসেবে সংগীত কে তিনি সফল ভাবে ব্যবহার করে ছিলেন এবং হয়ে উঠেছিলেন একজন সিদ্ধ পুরুষ|তার গান ” বারে বারে আর আসা হবেনা ” আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে|হালকা পাতলা গড়ন, গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, মাথায় ঝাঁকড়া চুল, চিবুকে এক গোছা দাড়ি, এই অতি সাধারণ চেহারার ভবাপাগলার মধ্যে ছিলো অসীম আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও বিশাল অলৌকিক ক্ষমতা, যা বার বার ধরা দিয়েছে তার নানান কর্ম কাণ্ডে, শোনা যায় একবার এক দুরারোগ্য ব্যাধি তে আক্রান্ত ব্যাক্তি কে অলৌকিক ভাবে সুস্থ করে দিয়েছিলেন ভবাপাগলা|আরো এমন বহু অলৌকিক কীর্তি আছে তার সারা জীবনে|নিজের জীবদ্দশায় প্রায় সাতটি কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি|এই মহান সাধক ১৯৮৪ খৃস্টাব্দে দেহ ত্যাগ করেন, আজও তিনি স্মরণীয় তার অলৌকিক কীর্তি ও তার গানের জন্যে|এই মহান কালী সাধককে আমার শ্রদ্ধা ও প্রনাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের লেখা|চলতে থাকবে এই ধরবাহিক লেখা লেখি|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|