পুরান কথা – প্রভু জগন্নাথের স্নান যাত্রা

622

আগামী 14 তারিখ রয়েছে দেবস্নান পূর্ণিমা বিশেষ একটি কারণে এই তিথি খুব গুরুত্বপূর্ণ|প্রাথমিক ভাবে নাম থেকেই বোঝা যায় এই পূর্ণিমা যে সে পূর্ণিমা নয় এ হলো দেবস্নান পূর্ণিমা, কারন এই পূর্ণিমা তিথিতে জগতের নাথ জগন্নাথের স্নান যাত্রার সূচনা হয়|শাস্ত্র মতে এই দিন জগন্নাথদেবের জন্মতিথি রথ যাত্রার সূচনা পর্ব|স্নানযাত্রা আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের খুবই পবিত্র উৎসব এবং এই স্নানযাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা এবং মদনমোহনের বিগ্রহ শোভাযাত্রা সহকারে গর্ভগৃহ থেকে স্নানবেদীতে আনা হয় এবং এই সময়ে ভক্তদের দর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়|স্নানযাত্রার দিন কূপের জল মন্ত্র দ্বারা শুদ্ধ করে ১০৮ কলস জলে বিগ্রহ স্নান করানো হয়। স্নানপর্বের পর বিগ্রহ সাজানো হয় গজবেশে। অনেকেই মনে করেন এই উৎসব কালে জগন্নাথ দর্শন করলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়| স্নানযাত্রার পর শুরু হয় অনসর। এই অনসরকালে জগন্নাথদেব অসুস্থতার কারণে ভক্তগণের অন্তরালে গোপন স্থানে চিকিৎসাধীন থাকেন,তিনি গৃহবন্দি হন,রথযাত্রা পর্যন্ত বিশ্রাম নেন,এই সময়ে জগৎ রক্ষাকারী এই দেবতাকে কম্বল চাপা দিয়ে রাখা হয়।আর রথযাত্রার দিন আত্মপ্রকাশ করেন। রথের দিন রাজবেশে ভক্তদের সাথে মিলিত হতে সবার সামনে আসেন জগতের নাথ|স্নান যাত্রার ইতিহাস অতি প্রাচীন, স্কন্দপুরাণ মতে পুরীর মন্দির প্রতিষ্ঠার পর রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই অনুষ্ঠান প্রচলন করেন এই বিশেষ তিথিতে|জ্যৈষ্ঠী পূর্ণিমায় শ্রী হরির স্নানযাত্রা দর্শনের মাধ্যমে অনায়াসেই জীব মুক্তি লাভ করতে পারে। এমন কি কেউ যদি ভক্তি সহকারে একবারও স্নান যাত্রা মহোৎসব দর্শন করেন, তাঁর সংসার বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ সুনিশ্চিত হয়ে যায়। তার আর শোক করতে হয় না। জৈমিনি মুনি স্নান যাত্রার মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ভগবান পুরুষোত্তমের স্নানযাত্রা দর্শন করলে জীব তীর্থ সমূহে় স্নান করার থেকেও শতগুণ অধিক ফল প্রাপ্ত হয় এবং এতে কোনো সংশয় নেই। যদি কেউ আন্তরিকতার সাথে স্নান কালে ভগবানকে নিরীক্ষণ করে, তাদের মোক্ষ লাভ হয়। জীবগণ ভবসাগর থেকে উদ্ধার লাভ করতে পারে এবং আজন্ম যা পাপ করেছে তা বিনষ্ট হয়ে যায় স্নান যাত্রা দর্শন করে|চলবে পুরানকথা জগন্নাথ ধাম পুরী ও তার মন্দিরে নিয়ে আরো আলোচনা থাকবে আগামী দিনে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|