তীর্থ ক্ষেত্রে পন্ডিতজি – বৈষ্ণদেবীর মন্দির

633

দক্ষিণ ভারতের তীর্থ ক্ষেত্র গুলি নিয়ে ইতিমধ্যে লিখেছি বেশ কয়েকটি পর্ব আজ বলবো ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান বৈষ্ণদেবীর মন্দির নিয়ে| বৈষ্ণদেবী স্বয়ং আদ্যাশক্তির একটি রূপ হিসেবে বিবেচিত হলেও তার উৎপত্তি নিয়ে কিছু লৌকিক কাহিনী প্রচলিত আছে|কথিত আছে এক ব্রাহ্মণ দম্পতির কন্যা ছিলেন বৈষ্ণদেবী|মাত্র নয় বছর বয়সে সে রাম ও বিষ্ণুকে তুষ্ট করার জন্য তপস্যা শুরু করতে শুরু করেন|অবশেষে ভগবান শ্রী রাম ও বিষ্ণু দুজনেই সন্তুষ্ট হয়ে আশীর্বাদ করেন বৈষ্ণোদেবী কে।দুর্গম পাহাড়ে একটি গুহার মধ্যে থাকতে শুরু করেন বৈষ্ণোদেবী এবং সেখানে তাঁর নিরাপত্তার জন্য শ্রীরাম একটি সিংহ ,হনুমান ও তীর-ধনুক দেন। এরপর থেকেই বৈষ্ণোদেবী ওই মন্দিরে থাকতে শুরু করেন এবং পরবর্তীকালে মাতা বৈষ্ণোদেবী নামে পূজিত হয়।আরো একটি কিংবদন্তী অনুসারে শ্রীধর নামে এক ভক্তকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন স্বয়ং বৈষ্ণদেবী। পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছিলেন কোন গুহার মধ্যে তাঁর মন্দির গড়বেন ভক্ত।দেবী আদেশানুয়ারী গুহা খুঁজে সেখানে শ্রীধর নির্মাণ করেন বৈষ্ণদেবী মন্দির। পরবর্তীতে এই মন্দিরই পরিচিতি পায় বৈষ্ণদেবী মাতার মন্দির নামে।আজও বৈষ্ণ দেবী পুজো উপলক্ষে কারণেই নয় দিন ধরে নবরাত্রি পালন করা হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে|বৈষ্ণ দেবীর মন্দিরটি বিশ্বে সবচেয়ে পবিত্রতম স্থান হিসাবেও পরিচিত। এই মন্দিরের মধ্যে রয়েছে তিনটি গুহা। তবে এই মন্দির গুলির মধ্যে একটি গুহা বছরে বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র ভক্তদের জন্য এই গুহা সব সময় খোলা থাকে। কথিত আছে, সংকীর্ণ ও দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা পেরিয়ে বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরে একবার যিনি যান ও দেবীর দর্শন লাভ করেন তার জীবন ধন্য হয়ে যায়|আমার জীবনে এই দুর্লভ সৌভাগ্য লাভ হয়েছে|প্রকৃতপক্ষেই দেবী দর্শনে দূর হয় ক্লান্তি, দেবী পূর্ণ করেন মনোস্কামনা।কথিত আছে মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে পাণ্ডবরা বৈষ্ণদেবীর উপাসনা করেছিলেন এবং তারাই এই দুর্গম স্থানে এই মন্দির নির্মান করেছিলেন|আদিম রহস্য, পবিত্রতা ও আধ্যাত্মিকতার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে দুর্গম এই বৈষ্ণদেবী মন্দিরে যা অনুভব করতে হয় ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল|তবু চেষ্টা করলাম সেই অভিজ্ঞতা ও কিছু তথ্য ভাগ করে নেয়ার|আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে|ভালো থাকুন|পড়তে থাকুন|ধন্যবাদ|