দেবী সরস্বতী এবং ব্যাস দেব

8
  • দেবী সরস্বতী এবং ব্যাস দেব

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

সনাতন ধর্মে শাস্ত্র রচনার ক্ষেত্রে ঋষি ব্যাস দেবের গুরুত্ব অপরিসীম। তার কল্যাণেই আমরা মহাকাব্য এবং পুরান পেয়েছি। অসংখ্য শাস্ত্র তিনি সৃষ্টি করেছেন। এসবই হয়েছে দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদে।ব্যাস দেব ছিলেন বাগদেবীর পরম ভক্ত।আজকের পর্ব ব্যাস দেব এবং তার সরস্বতী সাধনা নিয়ে।

 

সরস্বতী পুজোর আগে কেনো কুল খেতে নেই, বিশেষত বিদ্যার্থীদের তার উত্তর ও রয়েছে পুরানে। এবং এখানেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে সেই ব্যাস দেব।

পুরাণ মতে, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করতে একদিন বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা করার সিদ্ধান্ত নেন মহামুনি ব্যাসদেব। তপস্যা শুরুর আগেই দেবী সরস্বতী ব্যাসদেবকে একটি শর্ত দেন তাঁকে। একটি কুল বীজ রেখে তিনি বলেন, এই বীজ থেকে গাছ হয়ে কুল হবে। সেই কুল যেদিন ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে সেদিন দেবী সন্তুষ্ট হবেন ব্যাসদেবের তপস্যা সম্পূর্ণ হবে।

 

শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করেন ব্যাসদেব। দীর্ঘ সময় কেটে গেলো সেই বীজ থেকে গাছ হল, গাছে কুল ধরল এবং কুল পেকে তা ব্যাসদেবের মাথাতেও পড়ল। ঘটনাচক্রে সেই দিনটা ছিল পঞ্চমী, এরপর সরস্বতীর অর্চনায় কুল ফল নিবেদন করেন ব্যাসদেব । সেই থেকেই বিদ্যার দেবীর প্রসাদ হিসেবেই মরসুমের প্রথম কুল খাই আমরা। এবং দেবীর পুজোর আগে কারোর কুল খাওয়া উচিত নয় বিশেষ করে ছাত্র ছাত্রীদের কারন সরস্বতীর কৃপা তাদের সবথেকে বেশি প্রয়োজ।

 

দেশের প্রচিনতম সরস্বতী মন্দিরের সঙ্গেও ব্যাস দেবের সম্পর্ক রয়েছে।মন্দির টি অন্ধ্র প্রদেশের আদিলাবাদ জেলায় অবস্থিত। এটি বাসর বা বসরা নামেও পরিচিত। মায়ের এই মন্দিরটি গোদাবরী নদীর তীরে অবস্থিত। কিছু ধর্মীয় কিংবদন্তি অনুসারে, মহাভারতের যুদ্ধের পর, ঋষি ব্যাস শান্তির সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে গোদাবরী নদীর তীরে কুমারচল পাহাড়ে পৌঁছেছিলেন। এখানে তিনি দেবীর পুজো করতেন। তার পুজোয় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী তার সামনে আবির্ভূত হয়ে ছিলেন এবং তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন।

 

তিথি অনুসারে আজও সরস্বতী পুজো। আরো একবার আপনাদের সবাইকে জানাই সরস্বতী পুজোর শুভেচ্ছা। ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।