গণেশ চতুর্থীর আধ্যাত্মিক মাহাত্ম

43

গণেশ চতুর্থীর আধ্যাত্মিক মাহাত্ম

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, যেদিন ভগবান শিব ও মা পার্বতীর পুত্র গণেশের জন্ম হয়েছিল, সেই দিনটি ছিল ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী। তাই এই দিনটিকে গণেশ চতুর্থী বা বিনায়ক চতুর্থী রূপে পালন করা হয়।আজ সেই পবিত্র দিন।আজ গণেশ চতুর্থী।

তবে বিভিন্ন শাস্ত্রে গণেশের আবির্ভাব নিয়ে বিভিন্নরকম তথ্য পাওয়া যায়। শিব পুরাণে ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থীকে গণেশের জন্মদিন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেখানে গণেশ পুরাণের মতানুযায়ী গণেশের আবির্ভাব ঘটেছিল ভাদ্রপদ শুক্লা চতুর্থীতে।তবে একটি বিষয় সব গ্রন্থেই লিপিবদ্ধ তা হলো সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজা ঘরে সুখ, সমৃদ্ধি ও বৃদ্ধি নিয়ে আসে।

পার্বতী পুত্র গণেশ প্রারম্ভের দেবতা। তিনি বিঘ্ননাশক দেবতা তাই তার অপর নাম বিঘ্নেশ বা বিঘ্নেশ্বর, আবার তিনিই শিল্পকলা ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক, এবং মহাবল, মেধা ও বুদ্ধির দেবতা। শাস্ত্র মতে পূজা ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের সময় গণেশের পূজা সর্বাগ্রে করার কথা বলা হয়েছে তাতে কাজ সফল এবং সার্থক হয়।

বিভিন্ন পুরানে গণেশের একাধিক নামের অস্তিত্ব পাওয়া যায় যেমন হেরম্ব, বক্রতুণ্ড, একদন্ত, মহোদর, গজানন, লম্বোদর, বিকট ও বিঘ্নরাজ।
এদের মধ্যে একদন্ত নামটি নামটি হয়েছে তার একটি গজ দন্তের জন্য। এনিয়ে একটি পৌরাণিক ব্যাখ্যাও আছে।

একটি ব্যাখ্যা অনুসারে একবার পরশুরাম দেবাদিদেব মহাদেবের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর গৃহে যান। কিন্তু গণপতি দরজাতেই তাঁকে আটকে দেন। ভেতরে প্রবেশ করতে দেন না। কারণ সেই সময় মহাদেব ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। তখনই ক্রোধান্বিত হয়ে পরশুরাম গণপতির একটি দাঁত কেটে দেন তার অস্ত্র দিয়ে|

আবার অন্য একটি ব্যাখ্যা অনুসারে বেদব্যাসের সঙ্গে মহাভারত লিখতে বসে গণেশের কলম ভেঙে গিয়েছিল। যেহেতু ব্যাসদেব তাঁকে শর্ত দিয়েছিলেন যে, লেখা থামাতে পারবেন না। তাই গণপতি নাকি নিজের একটা দাঁত ভেঙে সেটিকে কলম হিসেবে ব্যবহার করে লেখা চালিয়ে যান।সেই থেকে গণেশ একদন্ত এবং এই রূপেই তাকে পুজো করা হয়।

আগামী কাল শাস্ত্র মতে গণেশ পুজো করুন। বিঘ্নহর্তার আশীর্বাদে সব বিঘ্ন দূর হবে। সবাইকে জানাই গণেশ চতুর্থীর শুভেচ্ছা।আবার একটি পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় বিষয় নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।