সামনেই অমাবস্যা এবং তারপর অন্নপূর্ণা কালী।
দেবী মাহাত্ম নিয়ে আলোচনা করছি ধারাবাহিক ভাবে। তবে আজ একটি প্রাচীন কালী মন্দিরের
কথা আপনাদের জানাবো যা শীল ফোর কালী মন্দির নামে খ্যাত। পুরুলিয়ার দুর্গম এক পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এই কালী মন্দির।
স্বাধীনতার আগে ১৯৩৪ সালে পুরুলিয়ার শিলফোড় পাহাড়ে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে কালীপুজো শুরু করলেন রায়সাহেব প্রেমচাঁদ মোদক।তিনি ছিলেন ঝালদার তৎকালীন জমিদার
তাকে রায় সাহেব উপাধি দিয়েছিল ব্রিটিশরা।সেই আনন্দে শ্যামা মায়ের আরাধনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।তার চেষ্টায় ও অর্থ ব্যায়ে শিলফোড় পাহাড়ের মাথায় তৈরি হয় মন্দির।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চলা কালীন দুর্গম এই শিলফোড় পাহাড়ের গুহাতে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুজোতে শামিল হন তাঁরাও।এই পুজো কে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পরে এক সময়ে।
জমিদার বাবু যে পুজো শুরু করে ছিলেন রায় বাহাদুর খেতাব পেয়ে সেই পুজো হয়ে ওঠে স্বাধীনতা সংগ্রামী দের মাতৃ আরাধনার কেন্দ্র এবং পরবর্তীতে সাধারন গ্রাম বাসীরা সেই পুজোকে বারোয়ারী পুজো রূপে এগিয়ে নিয়ে যায়।
শ্যামা কালীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে শিলফোড় পাহাড়ে চারদিন ধরে রীতিমতো উৎসব চলে। পরাধীন ভারতে যখন দিকে দিকে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। তখনও অন্ধকারে ডুবেছিল পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের এই শিলফোড় পাহাড়। ঘন অরণ্য জীব জন্তু এবং তার সাথে ব্রিটিশ গুপ্তচর আনাগোনা লেগেই থাকতো এখানে। পরবর্তীতে বিপ্লবীদের আগমনে পাহাড় ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।
জমিদার রায় সাহেবের মন্দির তৈরির সূত্র ধরে পাহাড় ও লাগোয়া এলাকায় বদল আসে।বর্তমানে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে এলাকার পর্যটন অন্য মাত্রা পেয়েছে কারন আজ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন শীলফোর পাহাড়ে
দেবী দর্শন করতে।
ধারাবাহিক এই আধ্যাত্মিক আলোচনা আবার হবে আগামী পর্বে। ফিরে আসবো অন্য কোনো মন্দিরের কথা নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।