পুরান কথা – মহা প্রসাদ কি জানুন

960

যারা পুরীতে গেছেন তারা হয়তো দেখেছেন জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশে বিমলাদেবীর মন্দির আছে। সেখানে জগন্নাথের প্রসাদ প্রথমে দেবী পার্বতীকে অর্পন করা হয়। পরে সেই মহাপ্রসাদ সবাইকে বিতরন করা হয়।আজ জানাবো কি ভাবে সৃষ্টি হলো এই মহা প্রসাদ ও কেনো তা আগে বিমলাদেবীর মন্দিরে নিবেদন করা হয়|নারদ মুনির একবার বাসনা হলো যে তিনি ভগবান নারায়নের প্রসাদ পেতে চান যার উপর অধিকার আছে শুধু মা লক্ষীর নারদ মুনি লক্ষীদেবী কে প্রসন্ন করার হেতু তপস্যা শুরু করলেন এবং ১২ বছর তপস্যার পর দেবী লক্ষী প্রসন্ন হলেন এবং নারদ মহা প্রসাদের ভাগ চাইলে লক্ষীদেবী বললেন ঠিক আছে তুমি এখানে অপেক্ষা কর, নারায়নের ভোজনশেষে তার অবশেষ প্রসাদ তুমি পাবে। অবশেষে যখন নারদ মুনি সেই প্রসাদ পেলেন এবং তা গ্রহন করে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন|শিব তখন নারদ মুনিকে তার আনন্দের হেতু জানতে চাইলেন।নারদ মুনি তখন সবিস্তারে সব বর্ননা করলেন। তা শুনে শিবের ও ইচ্ছা হলো যে সেও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। নারদ মুনি বললেন যে তিনি সব খেয়ে ফেলেছেন কিন্তু নারদ মুনি তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে হাতের একপাশে একবিন্দু প্রসাদ লেগে আছে। শিবজী সেটা জল দিয়ে ধুয়ে গ্রহন করলেন। সেই চিন্ময় প্রসাদের এমনই স্বাদ ছিল যে ওইটুকু খেয়েই শিব আনন্দে তান্ডব নৃত্য শুরু করে দিলেন।সব জানতে পেরে মাতা পার্বতী বললেন তিনিও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু এখনতো আর কোন ভাবে সম্ভব না। পার্বতী দেবী অভিমান করলেন এবং মাতা পার্বতী নারায়নের ধ্যান শুরু করলেন। দেবী পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন তাকে দর্শন দেন এবং বললেন বলো পার্বতী তুমি কি বর চাও। উত্তরে পার্বতী বললেন আমি আপনার মহা প্রসাদ চাই তবে হে ভগবান সন্তানদের রেখে আপনার প্রসাদ শুধু আমি একা পাব তা কখনই হতে পারে না।তাই আপনার মহাপ্রসাদ যাতে জগতের সবাই পায়,সেটাই আমার প্রর্থনা।উত্তরে ভগবান বললেন- কলিকালে আমি যখন জগন্নাথদেব রুপে লীলা করব তখন আমি আকাতরে আমি আমার মহাপ্রসাদ বিতরন করব। সেই প্রসাদ প্রথমে তোমাকে দেয়া হবে,পরে তা জগতের সবাইকে দেয়া হবে।পুরীতে পার্বতী দেবীই বিমলা দেবী রূপে বিরাজ করছেন এবং এই কারনেই চলে আসছে এই রীতি|আরো অনেক শাস্ত্রের কথা ও পৌরাণিক তথ্য নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|