হনুমানজী হলেন শিবজীর অবতার পুরানে বলা রয়েছে দেবী সীতার আশীর্বাদে তিনি অষ্ট সিদ্ধি ও নব নিধীর অধিকারী ছিলেন|হনুমান চালিসাতেও অষ্ট সিদ্ধির কথা উল্লেখ আছে|আজ জানাবো কি এই অষ্ট সিদ্ধি|সিদ্ধি লাভ করে কোন ব্যক্তি মহাজাগতিক শক্তির অধিকারী হন অষ্ট সিদ্ধি হলো আটটি অলৌকিক গুন|তার এই আটটি অলৌকিক ক্ষমতা হলো|অণিমা : এই সিদ্ধি লাভে সাধক তার শরীরকে অত্যন্ত ছোট করার ক্ষমতা রাখে। এক অনুর ন্যায় সাধক তার শরীর ছোট করতে পারে। হনুমানজীও তাঁর এই অণিমা সিদ্ধির দ্বারা লঙ্কাপুরী নিরক্ষণ করেন এবং সেখানে প্রবেশ করেন। মহীমা : এই সিদ্ধিটি উপরের অণিমা সিদ্ধির একদম বিপরীত। এই মহীমা সিদ্ধিতে সাধক তার শরীরের আকৃতি পাহাড় সমান বড় করতে পারে। এই সিদ্ধির মাধ্যমে হনুমানজী তার শরীর একশত যোজন বড় করতে পারতেন|গরীমা : গরীমা সিদ্ধির প্রয়োগে সাধক তার তার নিজের ইচ্ছা অনুসারে দেহের ওজন বাড়াতে পারে। হনুমানজীর এই সিদ্ধির প্রয়োগ আমরা মহাভারতে দেখতে পাই। তিনি ভীমের অহম চূর্ণ করবার জন্য এই সিদ্ধির প্রয়োগ করেছিলেন এবং শক্তিমান ভীম তার লেজ সরাতে ব্যার্থ হয়ে ছিলেন|লঘিমা : এই সিদ্ধি উপরের গরীমা সিদ্ধির একবারে বিপরীত সিদ্ধি। এতে সাধক তার শরীরের ওজন তার মনের ইচ্ছা অনুসারে লঘু অর্থাৎ কম করতে পারে। অশোকাবাটিকাতে সীতা মাতা যখন রাক্ষসী ও রাবণ সেণার পরিবেষ্টিত ছিলেন তখন তিনি গাছের পাতায় বসে নিজের দেহের ওজন হাল্কা করে সেই জায়গার নিরীক্ষণ করে ছিলেন হনুমান|প্রাপ্তি : এই সিদ্ধি লাভে সাধক ভবিষ্যত দ্রষ্টা হতে পারেন এবং পশু পাখি জীব জন্তুর ভাষা বোঝার ক্ষমতা লাভ করে। হনুমানজী রাবণ দ্বারা সীতা হরণের পর সীতা মাতার খোঁজ করতে গিয়ে অনেক পশু পাখি ও জীব জন্তুর কাছে সীতা মাতার খোঁজ করেন।প্রাকাম্য : অষ্ট সিদ্ধির মধ্যে ষষ্ঠ সিদ্ধি হল প্রাকাম্য। এই সিদ্ধি বলে সাধক যেকোন জায়গায় যাবার ক্ষমতা লাভ করে। এর প্রভাবে সাধক আকাশে উড়তে পারে, পাতালের কেন্দ্রে পর্যন্ত যেতে পারে। জলে জীবিত থাকতে পারে, সাধক চিরকাল যুবক থাকতে পারে এবং যেকোন দেহ ধারন করতে পারে।মহাবীর হনুমান রামায়নে একাধিকবার এই শক্তি প্রয়োগ করছেন|ঈশিত্ব : এই সিদ্ধি হল নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা। যে সাধক এই সিদ্ধি লাভ করেন তিনি দক্ষ নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা পায়। হনুমানজীও এই সিদ্ধির কার্যকরীতায় বানর সেনাকে সঠিক নেতৃত্ব দান করেন এবং শ্রীরাম চন্দ্রের জয় সুনিশ্চিত করেন। এছাড়াও এই সিদ্ধি প্রাপ্ত হওয়াতে সাধক কোন মৃত জীবের প্রান ফেরত দিতে পারে। বশিত্ব : এই সিদ্ধি লাভে সাধক জিতেন্দ্রিয় হয়। অর্থাৎ সাধক তার ইন্দ্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে। সাধক পশু পাখি এমনকি মানুষেকে নিজের বশে আনতে পারে।বজরংবলী এই বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন|সংক্ষেপে এই ছিলো অষ্ট সিদ্ধি|আগামী পর্বে এমনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রীয় বিষয় নিয়ে ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|