কালী কথা – বাঘেশ্বরী কালী

41

কালী কথা – বাঘেশ্বরী কালী

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

বাংলার জাগ্রত কালী মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম
হাওড়ার প্রাচীন একটি দক্ষিনা কালী মন্দির। যে মন্দিরে দেবী বাঘেশ্বরী রূপে পূজিতা হন।আজকের কালী কথায় এই বাঘেশ্বরী কালী মন্দির নিয়ে লিখবো।

ইতিহাস বলছে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বর্ধমানের মহারাজা কন্দর্পনারায়ণ।যদিও পুজো হতো অনেক আগে থেকেই।এক সময় এই অঞ্চলে বাঘের উৎপাত ছিলো। বাঘের হাত থেকে বাঁচতে শুরু হয় দেবীর পুজো।

শোনা যায় কালীভক্ত মহারাজা কন্দর্পনারায়ণ এক রাতে দক্ষিণা কালীকে স্বপ্নে দেখেছিলেন এবং স্বপ্নে মা দক্ষিণা কালী স্বয়ং মহারাজাকে দামোদরের তীরে তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা এবং নিমকাঠের মূর্তি তৈরী করার নির্দেশ দেন শুধু তাই নয় দেবী এও বলেন মূর্তির জন্য প্রয়োজনীয় নিমকাঠ নিজে থেকেই ভেসে আসবে দামোদর নদীতে। বাস্তবেও তাই হয়।নদীতে ভেসে আসে নীম কাঠ। সেই কাঠেই তৈরী হয় বিশাল আকৃতির দক্ষিণা কালী এবং দেবীর পদতলে থাকা মহাদেব।

তবে অলৌকিক ঘটনা যে শুধু শুরুতেই ঘটেছে তা নয়। তারপরেও ঘটেছে।পরবর্তীতে দু বার এই বাগেস্বরী কালী মন্দিরের সংস্কার হয় এবং আশ্চর্য জনক ভাবে প্রতিবারই দেবীর মূর্তির জন্য প্রয়োজনীয় নীম কাঠ ভেসে এসেছিলো পার্শবর্তী দামোদর নদীর স্রোতে।

শাস্ত্র মতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর শুরু হয়েছিলো পুজো এবং দ্রুত বাঘেশ্বরী কালীর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল দিকে দিকে। তাঁর করুণা লাভ করার জন্য তাঁর দরবারে আসতে শুরু করেছিলেন দেশ বিদেশের ভক্তের দল।

রাজ পরিবারের সহযোগিতায় শুরু হয় পুজো। আজ রাজা নেই তবুও সেই জনপ্রিয়তা এবং শ্রদ্ধা ভক্তি আজও অটুট আছে।আজও প্রতিটি অমাবস্যা তিথিতে মহা সমারোহে দেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়। দূর দূর থেকে দেবীর পুজো অংশ নিতে আসেন মানুষ। কথিত আছে বাগনানের দক্ষিনা কালী কাউকে খালি হাতে ফেরান না।

দেবী বাঘেশ্বরী আদতে দক্ষিনাকালীর এক রূপ।
স্থানীয় দের বিশ্বাস দেবী এই অঞ্চলের অভিভাবিকা তাই তাঁর অনুমতি ছাড়া ওই অঞ্চলে কোনও শুভকাজ হয় না। আশেপাশের অঞ্চলে কোনও শুভকাজ হলে আগে মায়ের পুজো দিয়ে তাঁর আশীর্বাদ নেওয়াটা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে স্থানীয়দের জন্য।

ফল হারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে চলতে থাকবে
এই কালী কথা। ফিরে আসবো আগামী দিনে
নতুন পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।