পুরানের দেব দেবী – বাস্তু দেবতা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাস্তু শাস্ত্রের জন্ম হয়েছে পুরান
থেকে কারন বাস্তুদেবতার উৎপত্তি এই পুরানেই লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং বাস্তু দেবতার পূজার্চনার ব্যাপারে একটি মজার ঘটনার উল্লেখ মেলে মৎস্য পুরানে ।
একটি পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী অনেকদিন আগে অন্ধক নামে এক অসুরের সাথে দেবাদিদেব মহাদেবের অনেক বছর ধরে যুদ্ধ হয় এবং অবশেষে মহাদেব অসুরকে বধ করেন ।
শিব যখন অসুরকে বধ করেন তখন তার শরীর নির্গত ঘাম থেকে এক দেবতার জন্ম হয় যিনি মৃত অন্ধকাসুর এবং তার যোদ্ধা গণের সমস্ত রক্ত পান করেন । কিন্তু তবুও তার খুদা শান্ত না হওয়াতে তিনি দেবাদিদেব মহাদেবের তপস্যা করেন । মহেশ্বর তপস্যাতে তুষ্ট হয়ে বর প্রদান করেন আর সেই বর পেয়ে তিনি ভূলোকে এসে সমস্ত প্রাণীদের খেতে শুরু করেন। তার এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে দেবতা, দানব, রাক্ষস এবং সমস্ত প্রাণী আতঙ্কিত হয়ে পরম পিতা ব্রহ্মাকে স্মরণ করেন । ব্রহ্মদেব তখন তাকে পেট পেতে উপুড় হওয়ার পরামর্শ দেন এবং ব্রম্হার পরামর্শ মেনে তিনি তাই করেন । এরপর ব্রম্হার পরামর্শ অনুযায়ী দেবতারা সেই ক্ষুদার্থ দেবতার পেটের ভেতর বিভিন্ন অংশে গিয়ে বসলেন।
ব্রহ্মা তখন তাকে বর দিলেন যে তিনি বাস্তু দেবতা রূপে সর্বত্র পূজিত হবেন । নতুন বাস ভবনের নির্মাণের আগে যদি কেউ তোমাকে বাস্তুদেবতা বলে মেনে পুজো করে এবং অন্নদান করে তাহলে তুমি তাকে সুখ সমৃদ্ধি দিয়ে ভরিয়ে তুলবে কিন্তু যদি কেউ তোমার পুজো না করে নতুন ঘরে বসবাস শুরু করে তবে তুমি তাকে ভক্ষণ করতে পারবে, এমনকি তাকে লাঞ্ছনাও দিতে পারবে ।আজও এই নীতি মেনেই ভারতবর্ষে বাস্তু পূজা হয় এবং বাস্তু দেব কে সন্তুষ্ট করা হয়।
সেই থেকে বাস্তু দেবতা আমাদের প্রত্যেকের গৃহে অবস্থান করছেন। তাকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলেই বাস্তু হবে ত্রুটিমুক্ত এবং সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ। অন্যথা হলেই বাস্তু দেবের রোষের মুখে
পড়তে হয়ে।
আবার পরের পর্বে অন্য এক পৌরাণিক দেবতার কথা নিয়ে ফিরে আসবো। থাকবে অনেক রোমাঞ্চকর পৌরাণিক ঘটনার উল্লেখ।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।