বিশেষ পর্ব – বাসন্তী পুজোর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

44

বিশেষ পর্ব – বাসন্তী পুজোর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

সারা বছরে দুবার দূর্গাপুজোর শাস্ত্রীয় বিধান আছে। শরৎ এবং বসন্ত এই দুই ঋতুতে দূর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়। বসন্ত কালে দেবী দুর্গার যে পুজো হয় তাকে বাসন্তী পুজো বলা হয়। এই কারণে দেবী দুর্গার আরেক নাম ও বাসন্তী। আজ বাসন্তী পুজোর এই মহা তিথিতে আপনাদের বাসন্তী পুজোর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবো।

 

পুরান অনুযায়ী সমাধি নামক বৈশ্যর সঙ্গে মিলে রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করে। যা পরবর্তীকালে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। দেবী দুর্গার প্রথম পূজারী হিসাবে চন্ডিতে রাজা সুরথের নাম উল্লেখ রয়েছে।

 

যোদ্ধা হিসাবে রাজা সুরথ ছিলেন বিখ্যাত । কোন যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হেরে যাননি একদিন প্রতিবেশী রাজ্য তাকে আক্রমণ করলে তিনি পরাজিত হন এই সুযোগে তার সভাসদরা লুঠপাঠ চালায়। নিজের কাছের লোকেদের এমন আচারনে তিনি অবাক হয়ে যান।ভগ্ন হৃদয়ে রাজকার্য ছেড়ে রাজা সুরথ এই সময় ঘুরতে ঘুরতে ঋষি মেধসের আশ্রমে পৌঁছান। ঋষি তাকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা মনের শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তার সঙ্গে সমাধি বলে একজনের দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন সমাধিকে তার স্ত্রী ও ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, তবুও তিনি বউ ছেলের ভালো-মন্দ এখনও ভেবে চলেছেন।

 

তারা দুজনেই বিস্মিত হলেন যে, যাদের কারণে তারা আজ সব হারিয়েছে, এখনও তারা তাদের ভালো চেয়ে যাচ্ছেন। ঋষিকে এ কথা জানানোতে তিনি বলেন যে এসবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনী বর্ণনা করেন। ঋষির পরামর্শ মতই রাজা কঠিন তপস্যা শুরু করে। পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই রাজা বসন্তকালের শুক্লপক্ষে দেবী দুর্গার পুজো শুরু করে সেই সময় থেকে শুরু হয়েছিল বাসন্তী পুজো।আজও শরৎ এবং বসন্ত এই ঋতুতে দেবী দুর্গার দুবার পুজো অনুষ্ঠিত হয়।

 

শরৎ কালে পুজো অকাল পুজো তাই শরৎ ঋতুতে দেবীর বোধন করে পুজো করতে হয়। শাস্ত্র মতে শরৎ ঋতু দেবতাদের রাত্রি তাই অকাল বলা হয় এবং বোধন করে পুজো শুরু করতে হয়। বসন্ত ঋতুতে দেবতারা জাগরিত থাকেন তাই

বোধনের প্রয়োজন হয়না।

 

অর্থাৎ শাস্ত্র মতে বাসন্তী পুজো বিশেষ ভাবে তাৎপর্য পূর্ণ। আজ এই বাসন্তী পুজোর দিনে আপনাদের সবাইকে আন্তরিক জানাই শুভেচ্ছা।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে থাকবে। বিশেষ একটি পর্ব। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।