একান্ন পীঠ – যশোরেশ্বরী

59

একান্ন পীঠ পর্বে বাংলা দেশে অবস্থিত শক্তিপীঠ যশোরেশ্বরী নিয়ে লিখবো।

 

সনাতন ধর্মের ৫১ পীঠের একটি যশোরেশ্বরী মন্দির|দেহত্যাগের পর দেবী সতীর শরীর যে ৫১ খণ্ড হয়ে যায় তার পাঁচটি খন্ড বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এর মধ্যে এর মধ্যে সাতক্ষীরার ঈশ্বরীপুর গ্রামে সতীর করকমল বা পাণিপদ্ম পতিত হয়|

 

তন্ত্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে—

 

‘যশোরে পানিপদ্ম দেবতা যশোরেশ্বরী,/চণ্ডশ্চ ভৈরব যত্র তত্র সিদ্ধ ন সংশয়।’

 

অর্থাৎ যশোরে সতীর পাণিপদ্ম বা করকমল পড়েছে। দেবীর নাম যশোরেশ্বরী, ভৈরব হলেন চণ্ড। এই সতীপীঠে কায়মনোবাক্যে পুজো করলে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে সর্বসাধারণের বিশ্বাস।

 

মনেকরা হয় বহু প্রাচীনকাল থেকেই এখানে এক অজ্ঞাত ব্রাহ্মণ কতৃক নির্মিত যশোরেশ্বরী মন্দির অবস্থিত ছিলো পরবর্তীকালে লক্ষ্মণ সেন ও প্রতাপাদিত্য কর্তৃক তাদের রাজত্বকালে এটির সংস্কার করা হয়েছিল|মুঘল আমলে সেনাপতি মান সিংহ এই স্থানে আসতেন পুজো দিতে।

 

মন্দির নিয়ে একটি অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখও পাওয়াযায়, কথিত আছে,মহারাজা প্রতাপাদিত্যর আমলে তার সেনাপতি এখানকার জঙ্গল থেকে একটি আলৌকিক আলোর রেখা বের হয়ে মানুষের হাতেরর তালুর আকারের একটি পাথরখণ্ডের উপর পড়তে দেখেন।পরবর্তীতে তিনি ওই স্থানে কালীর পূজা করতে আরম্ভ করেন এবং এই কালী মন্দিরটি নির্মাণ করেন যা আজ যশোরেশ্বরী কালী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ|

 

বর্তমানে মন্দির-বেদির ওপর প্রতিষ্ঠিত মাতৃমূর্তির শুধু মুখমণ্ডলই দৃষ্টিগোচর হয়|মায়ের মাথার ওপর টকটকে লাল রঙের চাঁদোয়া। কণ্ঠে রক্তজবার মালা ও নানা অলংকার। মাথায় সোনার মুকুট। লোলজিহ্বা দেবীর ভীষণা মূর্তি তবে মুখ মন্ডলে এক অদ্ভুত প্রশান্তি ও স্নিগ্ধতা|দেবীর মন্দিরে

বর্তমানে একটি দরজা এবং ছটি জানলা আছে।

 

প্রত্যেক শনি মঙ্গলবার দেবীর পুজো হয়

যশোরেশ্বরীর পুজো তন্ত্রমতে হয় এবং প্রতিবছর মন্দিরে খুব ধুমধাম করে শ্যামাপুজো হয় যা

দর্শন করতে আসেন অসংখ্য মানুষ

যারা নিজেরদের মনোস্কামনা জানান দেবীর কাছে। বিশ্বাস করা হয় দেবী সবার মনোস্কামনা পূর্ণ করেন।

 

পরবর্তী শক্তিপীঠ নিয়ে ফিরে আসবো যথা সময়ে

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।