চলছে রথ যাত্রা উৎসব। উল্টো রথ দিয়ে হবে এই শাস্ত্রীয় উৎসবের সমাপ্তি। এই সময় প্রভু জগন্নাথের নানা বিধ লীলা এবং শ্রী ক্ষেত্রের মহিমা বর্ণনা করার উত্তম সময়।এই পুরী ধাম শুধু জগন্নাথ ধাম নয়।দেবী বিমলা এই শ্রী খেত্রেই অধিষ্টান করেন।পীঠনির্ণয় তন্ত্রে আছে – “উৎকলে নাভিদেশশ্চ বিরিজাক্ষেত্রমুচ্চতে বিমলা মা মহাদেবী, জগন্নাথস্ত ভৈরব”অর্থাৎ তিনি শ্রীমন্দিরের কত্রী।প্রভু জগন্নাথ তাঁর ভৈরব হিসেবে অবস্থান করেন।আবার তিনিদেবী মহামায়ার অংশ এবং একান্ন টি সতীপীঠের অন্যতমা দেবী বিমলার মন্দির ।আজও জগন্নাথের ভোগ সবার আগে সমর্পন করা হয় তাঁকেই। দেবীর পুজো হয় তন্ত্রমতে। মনে করা হয় দেবী বিমলার দর্শন না করা অবধি জগন্নাথ দর্শন সম্পূর্ণ হয় না।পুরান মতে বিষ্ণু দর্শন হেতু মহাদেব একবার বৈকুণ্ঠে হাজির হন। সেই সময় বিষ্ণু আহারে বসেছেন। যা দেখে শিবের ইচ্ছা হয় নারায়ণের প্রসাদ গ্রহন করবেন তাই আহার শেষে নারায়ণের থালায় পড়ে থাকা সামান্য অংশ মুখে দেন তিনি। নারায়ণের ভাবে তিনি এতটাই আবিষ্ট ছিলেন যে সেই প্রসাদের কিছুটা তাঁর মুখে লেগে যায়। কৈলাসে ফিরে নারদকে দেখতে পান মহাদেব। বিষ্ণুভক্ত নারদ মহাদেবের মুখে লেগে থাকা প্রসাদ দেখেই বুঝতে পারেন এই প্রসাদ তাঁর উপাস্যের। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে প্রসাদ নিয়ে মুখে পোড়েন তিনি। দেবী পার্বতীও সেখানে উপস্থিত হন। প্রসাদ পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিন্তু শিব তো অপারগ কারন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ক্রোধান্নিতা পার্বতী হাজির হন নারায়ণের কাছে। সব শুনে নারায়ণ তাঁকে বলেন এবার থেকে পুরী ধামে তাঁর শক্তি রূপে অবস্থান করবেন দেবী।এবং নারায়ণের প্রসাদ সবার আগে তাঁকে অর্পন করা হবে। যে প্রথা আজও এতটুকু বদল হয়নি। দেবী বিমলাকে অর্পন করার পরই জগন্নাথের প্রসাদ হয়ে ওঠে মহাপ্রসাদ।সেই প্রসাদ পরবর্তীতে বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে।শ্রীমন্দিরে চত্বরেই দেবী বিমলার মন্দির। আবার পুরাণমতে সতীর ডান পায়ের কড়ে আঙুল পড়েছিল এই খানে তাই এটি সতী পীঠ।ফিরে আসবো আগামী পর্বে উল্টোরথ উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।