শাস্ত্র মতে শিবপূজাকেও শক্তিপূজা বলা যেতে পারে কারন শিব হল ধ্বংসের দেবতা বা প্রলয়ের দেবতা যা এক কথায় শক্তিকেই প্রদর্শন কর কিন্তু আমাদের জেনে রাখতে হবে যে এই ‘শক্তি’ কথাটি স্ত্রী বাচক, অর্থাৎ শক্তিপূজা বলতে নারী বা মাতৃ পূজাই বলা হয়ে থাকে আর এই মাতৃশক্তি সাধনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ তিথি হলো ফলহারিণী অমাবস্যা|ফল হারিণী কালীপুজোর ঐতিহ্যের দিক থেকে পিছিয়ে নেই বর্ধমান। জেলার বহু গ্রামে প্রাচীন কালীপুজো হয়। সে সব পুজো শুরুর পিছনে রয়েছে নানা কাহিনীও। জাঁকজমক কমলেও, পুজোর উদ্যোগে ভাটা পড়েনি আজও।আলাদা করে বলা যায় মানকরের আনন্দময়ী কালীর কথা|বুদবুদের মানকর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির কালীপুজো প্রায় তিনশো বছরের পুরনো। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কালী ‘আনন্দময়ী’ কালী হিসাবেই পরিচিত। বর্ধমানের রাজা উদয়চাঁদের কবিরাজ ছিলেন রাজবল্লভ গুপ্ত। জনশ্রুতি আছে, এক সময় রাজার মেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলেন রাজবল্লভ। এর পরে, তাঁকে মানকরে বেশকিছু জমি, পুকুর দেওয়া হয়। তাঁকে ‘রাজবৈদ্য’ হিসাবে নিযুক্তও করা হয়। তখন থেকেই রাজবল্লভ মানকরে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানেই আনন্দময়ী কালীর পুজো শুরু করেন।পুজোর দায়িত্বে থাকা বর্তমান প্রজন্মথেকে জানা যায় রাজবল্লভ ‘স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে কাশী থেকে কষ্টি পাথরের কালী মূর্তি নিয়ে এসে পুজো শুরু করেন। সারা বছর পুজো হয় এই মন্দিরে। তবে জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী পুজো খুব ধুমধাম করে নিষ্ঠা সহকারে হয় এখানে।এই পুজোয় ১৮ রকমের মিষ্টি দেওয়া হয়। নুন ছাড়া, তরকারি পুজোর ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়। মন্দিরের পাশে থাকা পুকুরে আজও পুজো উপলক্ষে কষ্টি পাথরের দেবী মূর্তিকে স্নান করানো হয়। সম্পূর্ণ স্নান পক্রিয়া হয় গোপনে শুধু মাত্র পূজারীদের উপস্থিতিতে এবং আজও এই পুকুরে সাধারণের ব্যবহার নিষিদ্ধ।ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|