শিব ও শঙ্কর কি একজন নাকি দুই ভিন্ন সত্ত্বা আজকের শিব ভূমির এই পর্বে শুরুতে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো|শিবপুরাণ এবং শৈবাগম শাস্ত্র এই দুই গ্রন্থে এই বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে|এই বই দুইটি-তে বলা হয়েছে শিব নামটি-র সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিবলিঙ্গের কথা। অন্যদিকে শঙ্কর নামটি হল ভগবানরূপে কল্পিত শিব-এর মানবরূপী পরিচয়। যার ফলে শিব পূজোয় যখন কল্পিত আচার পালন হয় সেখানে শিবকল্প ও শঙ্করকল্পের মধ্যে আচার-বিধির তফাৎ আসে। শিব ও শঙ্কর এই দুটি সবচেয়ে বেশি করে হিন্দু সমাজে ঘোরাফেরা করে। বিশেষ করে যারা ধর্মীয় ভাবাবেগকে দর্শন করে ঈশ্বর কল্পনায় মূর্ত হন তাদের কাছে শিব ও শঙ্কর নাম দুটি নিয়ে প্রবল ধাঁধা রয়ে গিয়েছে|শৈবাগম শাস্ত্র বলছে, শিব একটি পরমসত্তা। তিনি মহাজাগতিক চৈতন্য বা পরাচৈতন্যের প্রতিভূ। শিবলিঙ্গের অবয়ব সে সত্তা-কে স্মরণ করে। অন্যদিকে শঙ্কর হল শিবের একটি মানবায়িত রূপ। সেইসঙ্গে তিনি সুক্ষ্মদেহ সম্পন্ন এক সত্তা। তিনি ধ্যানরূপেণ পূজিত হন।আজকের পর্বে শিব ভূমি জাটোলি শিব মন্দিরের কথা বলবো,এই সুউচ্ছ শিবমন্দির দেবভূমি হিমাচল প্রদেশের সোলানে অবস্থিত রয়েছে|অনেকের মতেই এই মন্দির দেশের উচ্চতম শিব মন্দির|এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অতি প্রাচীন এমননি একটি প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে প্রাচীনকালে স্বয়ং মহাদেব এই জায়গায় এসেছিলেন ও কিছুটা সময় এখানে কাটিয়ে যান|একটি বিশেষ কারনে এই মন্দির রহস্যময় মন্দিরে পরিনত হয়েছে|কথিত আছে এই মন্দিরের দেয়াল থেকে ডমরুর শব্দ উৎপন্ন হয়ে|এই মন্দিরের দেয়ালে আঘাত করলে এক বিশেষ ধরণের শব্দের তরঙ্গ তৈরি হয়। যা হুবহু মহাদেব হাতের বাদ্যযন্ত্র, ডমরুর শব্দের মতো|আস্থাশীল ও নিষ্ঠাবান দর্শিনার্থীদের কাছে এই অলৌকিক শব্দ বা ডমরু ধ্বনি অতি পবিত্র|শিব সাধক স্বামী কৃষ্ণানন্দ পরমহংস ১৯৭৪ সালে বর্তমানে অবস্থিত মন্দিরের স্থাপনা কার্য শুরু করেন| মন্দিরের উচ্ছতা ১১১ ফুট|মন্দিরের ভিতরের এক ক্রিস্টাল শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে এবং শিব পার্বতীর মূর্তিও রয়েছে|পাশাপাশি আরও অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তিও রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ১১ ফুট উঁচু সোনার কলসি রাখা আছে মন্দিরের সর্বোচ্চ স্থানে|চলবে শিব নিয়ে আলোচনা আবার ফিরে আসবো নতুন পর্ব নিয়ে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|