মা সারদার জন্মতিথিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

32

মা সারদার জন্মতিথিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজকের দিনটি রামকৃষ্ণ ও মা সারদার অনুরাগী দের কাছে একটি স্মরণীয় দিন, আজ দেবী সারদার তিথি|আজ মা সারদার ব্যাক্তিত্বের একটি বিশেষ দিক আলোচনা করে তাকে শ্রদ্ধা জানাবো,তার দিব্য চরনে আমার প্রনাম নিবেদন করবো।

 

একবার মা তার ভক্ত আমজাদকে নিজের হাতে খেতে দিয়েছিলেন, এমনকী খাওয়া শেষে এঁটো থালা পরিষ্কার করতেও তাঁর কোনও দ্বিধা ছিল না। আমজাদের পরিচয় সম্পর্কে মাকে মনে করিয়ে দেওয়ায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার শরৎ যেমন ছেলে, ওই আমজাদও তেমন ছেলে’, এখানে শরৎ, অর্থাৎ পরবর্তী কালে স্বামী সারদানন্দ মহারাজ।এই সামান্য ঘটনাটির তাৎপর্য মোটেও সাধারণ নয়। আজকের এই জটিল আর্থ-সামাজিক দুনিয়ায়, যেখানে অসহিষ্ণুতার একটা বিষময় বাতাবরণ, সেখানে মা সারদার এই সহজ অভিব্যক্তিটা খুব বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করি। আজও আমরা সর্বস্তরে জাতপাতের সীমানা লঙ্ঘন করতে পারছি না। আমরা সবাই এক এবং অভিন্ন, এই শাশ্বত বোধ আমাদের সবার মধ্যে আসছে না|কিন্তু পথ দেখাতে পারেন মা সারদা ও তার ত্যাগ এবং আদর্শ যিনি সেই যুগে দাঁড়িয়ে প্রকৃত সমাজসেবী হিসেবে এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন, ‘আমরা ওরা’র বন্ধন।মা সারদা প্রকৃত অর্থেই হয়ে উঠেছিলেন সৎ এর ও মা আবার অসৎ এর ও মা|

তার কাছে নরেন ও যা রঘু ডাকাত ও তাই|

 

প্রতিটি মানুষকে নিজের মধ্যে দেবতাজ্ঞানে গ্রহণ করতেন। সাড়া দিয়েছেন সবার ডাকে, এমনকী পশুপাখিদেরও সন্তানস্নেহে আপ্লুত করেছেন। তার অলৌকিক সত্ত্বা ভক্তদের থেকে আড়ালে থাকতো।

 

এক বার এক সহজ সরল ভক্ত নিজেকে সংযত করে রাখতে না পেরে মাকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন, মা, আপনি কি সাক্ষাৎ মা কালী? সারদা দেবী মৃদু হেসে বলেছিলেন – ওই, লোকে বলে কালী’!

 

ভক্তদের কাছে মা সারদা ছিলেন সাক্ষাৎ জগৎজননী। ঠাকুর রামকৃষ্ণর যদি অবতার হন তাহলে মা সারদা ছিলেন ভগবানের লীলা সঙ্গিনী।

 

আজ জন্মতিথিতে বিশ্ব জননী, সংঘ জননী মা সারদার চরনে আমার শত কোটি প্রনাম এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি।জয় মা সারদা।