68

দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ – ত্রম্ব্যকেশ্বর মন্দির

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে লগ্ন কুন্ডলি তে যে কয়েকটি অশুভ গ্রহগত সংযোগ থাকে তার মধ্যে অন্যতম কাল স্বর্প দোষ|মোট বারো প্রকারের কাল স্বর্প দোষ থাকে যার সব গুলোই একেকটা সাপের নামে।আজ যে জ্যোতির্লিঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করবো তার সাথে এই কালসর্প দোষের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।

 

পুরান মতে একবার গণেশ মহাদেবের পুজো করেন সেই সময়ে শিবের গলায় থাকা বাসুকি নাগের মনে হয় যে গণেশ তারই পুজো করছেন। তার এই ঔদ্ধত্যের জন্য শিব রেগে গিয়ে তাকে অভিশাপ দেন যে নাগকূল তাদের সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।তাই হয়|পরবর্তীতে ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা নাগেরা শিবের কাছে গিয়ে অভিশাপ ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানায়। শিব তখন দয়া বসত তাদের মর্ত্যে গিয়ে তাঁর পুজো করতে বলেন|নাগকুল এই ত্রম্বকেশ্বর মন্দিরে শিব পূজা করে তাদের হারানো গৌরব ফিরে পায়|

 

আরেকটি পৌরাণিক আখ্যান মতে রাহু ও কেতুও এই স্থানে মহাদেবের পুজো করেছিলেন।যেহেতু রাহু এবং কেতু নাগ রূপে গ্রহদের গ্রাস করে কাল সর্প দোষের জন্মদেয় তাই এই স্থানের সাথে জ্যোতিষ শাস্ত্র এবং বিশেষ করে কাল সর্প দোষ খন্ডনের গভীর আধ্যাত্মিক সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে।

 

মহা রাষ্ট্রে অবস্থিত বর্তমান মন্দির টি নির্মাণ করিয়েছিলেন পেশোয়া তৃতীয় বালাজি বাজি রাও,1755 থেকে 1786 দীর্ঘ একত্রিশ বছর লেগেছিলো এই মন্দির নির্মাণ সম্পুর্ন হতে|ত্র্যম্বকেশ্বর মন্দিরের পিছনের পাহাড় ব্রহ্মগিরি থেকে উদ্ভূত হয়ে গোদাবরী গুপ্ত ভাবে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে এসে ক্ষীণ আকারে বেরিয়ে আসছে জ্যোতির্লিঙ্গ ত্র্যম্বকেশ্বরের মধ্য থেকে। মন্দির থেকে কিছু দূরে কুশাবর্ত কুণ্ড ও গোমতী ঘাট। কুম্ভপর্বে যে তিনটি স্নান হয়, তার একটি রামতীর্থ রামঘাটে ও অপর দুটি হয় এই কুশাবর্ত তীর্থে। কয়েক বছর আগে আমি নিজে গিয়েছিলাম ত্রম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন করতে এবং

অভিভূত হয়ে ছিলাম সেই আধ্যাত্মিক পরিবেশ এবং অলৌকিক শক্তির উপস্থিতি উপলব্ধি করে।

 

আজও বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরে রাহু কেতুর অশুভ প্রভাব বিশেষ করে কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পেতে।

 

ফিরে আসবো আরো একটি জ্যোতির্লিঙ্গর কথা নিয়ে সঙ্গে থাকবে পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় নানা তথ্য। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।