পুরানের দেব দেবী – হনুমান

42

পুরানের দেব দেবী – হনুমান

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আজকের পর্বে আপনাদের জানাবো রূদ্র
অবতার হনুমান সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য|

হনুমানের পিতার নাম ছিল কেশরী, মায়ের নাম ছিল অঞ্জনা। হনুমানের পালক পিতা হলেন পবন দেবতা|রাক্ষস বাহিনীর অত্যাচার থেকে ধরিত্রীকে মুক্ত করতে তথা ভগবান রামের সেবা ও রাম নাম প্রচারের জন্যই রুদ্র অবতার হনুমানের আবির্ভাব।

পুরানের একটি ঘটনা অনুসারে একদা দশানন রাবণ কৈলাশে পাহারারত নন্দীকে ব্যাঙ্গ করলেন বানর বলে|ক্ষিপ্ত হয়ে নন্দী রাবণকে অভিশাপ দিলেন এক বানরের হাতেই রাবণ আর তার কূল ধ্বংস হবে|এই অভিশাপই পরবর্তীতে সত্য হয়েছিলো। রাবনের পতনের বড়ো ভূমিকা নিয়েছিলেন হনুমানজি।

শুধু রামায়ণ নয়। হনুমানজী দ্বাপর যুগেও ছিলেন।এমনকি মহাভারতেও তার উল্লেখ রয়েছে মনে করা হয় কুরুক্ষে যুদ্ধে অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণের রথের ধ্বজা হিসেবে ছিলেন। তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায়।কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেছেন। হনুমানজীর অনুরোধে শ্রীকৃষ্ণ রামচন্দ্রের রূপ ধারণ করে হনুমানকে একবার দর্শন দিয়েছিলেন।
শাস্ত্র মতে হনুমান চার যুগে অমর অর্থাৎ তিনি আজও স্বশরীরে এই পৃথিবীতে বিরাজমান।

বজরংবলী অষ্ট সিদ্ধির অধিকারী। অর্থাৎ আটটি দুর্লভ ক্ষমতা রয়েছে তার। আবার তার স্মরণাগত দের গ্রহ রাজ শনিদেব কোনো ক্ষতি করেন না কারন রাবনের কারাগার থেকে তিনি শনিদেবকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং শনিদেব খুশি হয়ে তাকে এই বর দিয়েছিলেন।

অনেকেই মনে করেন বজরংবলী ব্রহ্মচারী। অবিবাহিত।একথা আংশিক সত্য,পুরান অনুসারে হনুমান বিবাহিত এবং তার সন্তানও রয়েছে|

সূর্যদেব ছিলেন হুনুমানের শিক্ষক, তিনি হনুমানকে নবনিধীর শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু নবম সূত্রটি কেবল মাত্র বিবাহিত দের জন্যে তাই বিবাহ করা বাধ্যতামূলক ছিলো।এই কারনে শিবের আশীর্বাদে শুভ্রলা নামে একটি কন্যা সৃষ্টি হয় এবং হনুমানের সাথে তার বিবাহ হয় তবে বিবাহের পরের মুহূর্তেই শুভ্ৰলা অদৃশ্য হয়|এই ভাবে বিবাহিত হয়েও ব্রহ্মচারী রয়ে গেলেন হনুমান|অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মন্দিরে হনুমান তার স্ত্রী শুভ্ৰলার সাথে একত্রে পূজিত হন|

শাস্ত্র মতে হনুমানের একটি পুত্রও ছিলো যার জন্ম হয়ে ছিলো অদ্ভুত ভাবে, লঙ্কা অভিযানের সময়ে হনুমানের শরীরের এক ফোঁটা ঘাম পড়েছিলো সমুদ্রে এই ঘামের বিন্দু থেকে জন্মান হনুমান পুত্র মকরধজ|

রূদ্র অবতার হনুমানের চরনে প্রনাম জানিয়ে আজকের এই বিশেষ পর্ব শেষ করছি।পরের পর্বে আরো এক পৌরাণিক দেবতার কথা লিখবো।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।