গণেশ কুবের এবং চন্দ্র

36

গণেশ কুবের এবং চন্দ্র

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আসন্ন গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে আজ আরো একটি গণেশ দেবের মহিমা আপনাদের জন্য লিখবো।
আজকের এই পৌরাণিক ঘটনার প্রধান তিনটি চরিত্র হলেন গণেশ, কুবের এবং চন্দ্র।

সনাতন ধর্মে কুবের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন দেবতা ছিলেন কারণ তিনি মহাবিশ্বের সমস্ত ধনসম্পদের অধীশ্বর।তার তার কাছে ছিল অগাধ গুপ্তধন এবং তার ভান্ডারে সবকিছুই ছিল যার জন্য তিনি খুবই গর্বিত ছিলেন।নিজের ধন সম্পদ ও বৈভব দেখানোর জন্য একদিন কুবের সমস্ত দেবতাদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ করেন এবং তাদের মধ্যে শিব এবং পার্বতীও ছিলেন।কিন্তু তারা দুজনেই সেই ভোজ সভায় উপস্থিত না হয়ে তারা গণেশকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান।গণেশ কুবেরের ব্যবহার লক্ষ্য করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন তার গর্ব খর্ব করার।তিনি সমস্ত খাবারই দ্রুত খেয়ে ফেলেন এবং তার ফলে অন্যান্য আমন্ত্রিতদের জন্য কিছুই অবশিষ্ট থাকে না যদিও তাতেও তার ক্ষুধানিবৃত্তি হয়নি।তখন সে কুবেরের সঞ্চিত সম্পদ এবং ঐশ্বর্যগুলি খেতে শুরু করেন এর মধ্যে ছিল স্বর্ণ এবং অন্যান্য দামি বস্তু সমূহ। তাতেও তার পেট না ভরাতে তিনি কুবেরকে খেতে চান|নিজেকে বাঁচাতে সেইসময় কুবের কৈলাস পর্বতে দৌড়ে যান আশ্রয়ের খোঁজে এবং মহাদেবের কাছে স্মরণ নেন|মহেশ্বর গণেশের এই রূপ আচরনের প্রকৃত কারণ বুঝতে পেরে ক্ষুদার্থ গণেশকে তৎক্ষণাৎ অন্ন পরিবেশন করেন ।গণেশ সেই অন্ন গ্রহণের সাথে সাথে তার ক্ষুধা নিবৃত্তি ঘটে।তিনি শান্ত হয়ে কুবের দেবকে ছেড়ে দেন|ঘটনার পর কুবের বুঝতে পারেন লোভীর মতো সম্পদ গ্রহণ করা উচিত নয় এবং সেই সম্পদ নিয়ে গর্ব বা অহংকার অনুচিত তিনি সম্মত হন তার সমস্ত সম্পদ প্রয়জনে সকলের মধ্যে বিলিয়ে দিতে সম্মত হলেন।

গণেশ যখন কুবেরকে শিক্ষা দিছিলেন তখন আকাশ থেকে সমগ্র বিষয়টি দেখে চন্দ্র দেব হেসে ফেলেন এবং গনেশ এতে প্রচণ্ড রেগে যান এবং চন্দ্র দেবকে অভিশাপ দিয়ে বলেন গণেশ চতুর্থীর দিন চন্দ্রকে দেখতে পাবেন না কেউ যদিও বা
কেউ চন্দ্রকে দেখেন তা অশুভ বলে চিহ্নিত হবে।
এই ভাবে গণেশ একই সাথে কুবের এবং চন্দ্রকে দন্ড দিয়েছিলেন।

গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে আবার ফিরে আসবো আগামী দিনে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।